প্রতিদিন যে কোন এক সময় নির্দিষ্ট করে সেই সময়ে প্রতিদিন 30 মিনিট ব্যায়াম করুন। সপ্তাহে একদিন বন্ধ রাখবেন। একদিনে হঠাৎ করে অনেক বেশি ব্যায়াম করবেন না। অনিয়ন্ত্রিত (diabetic) ডায়াবেটিস রোগীদের করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই এই সময় রোগীদের অনেক বেশী সাবধানে থাকতে হবে। বাইরে যাওয়া যতটা সম্ভব এড়াতে হবে। বাড়িতে থেকেই ব্যায়াম করতে হবে।
২। বাসাতে ঘর বড় না হলে ছাদে হাটা যেতে পারে।
৩। যদি তারও সুবিধা না থাকে তবে বাড়িতে বসে ব্লাটার ফ্লাই (Butterfly exercise) ব্যায়ামটি করুন। এই ব্যায়ামের নিয়ম হলো প্রথমে পদ্মাসনে বসুন। তারপর আপনার পায়ের গুরালি একসাথে আনুন। মেরুদন্ড সোজা করে বসুন আপনার গোড়ালি যতটা সম্ভব দেহের নিকটে আনুন এবং দুই হাত দিয়ে ধরে রাখুন। হাটু নিচে মাটির দিকে যথাসম্ভব নিচে নামান। তারপর আবার তুলুন। এভাবে বারবার করতে থাকবেন। যেমন প্রজাপতির পাখা নাড়ানোর মতো। এইভাবে বারবার করতে থাকুন মনে রাখতে হবে যাতে জোর করে পায়ের হাটু গুলি মাটিতে নামাবেন না। জোর করে করলে হিতে বিপরীত হবে। এই ব্যায়াম করার সময় শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। ৫০ সেকেন্ড করার পর ১০ সেকেন্ড বিশ্রাম করুন। এভাবে ৩ কিস্তি করুন। এই ব্যায়াম করলে না হাঁটলেও চলবে।
আপনি যদি কোনও মুহুর্তে চরম ব্যথা অনুভব করতে শুরু করেন তবে 30-40 সেকেন্ডের জন্য সেই স্থানে থামুন।
৪। দেয়াল বা কোনো বড় শক্ত কাঠামোর বিপরীতে হাত ও পা দিয়ে চাপ দিয়ে কয়েক সেকেন্ড শরীরের ওজন ধরে রাখুন (রেজিসস্ট্যান্স এক্সারসাইজ)।
৫। এ সময় বাড়ির বাইরে হাঁটা একদম নিষেধ।
৬। পাবলিক ব্যায়ামাগার, সুইমিংপুল, খেলার মাঠ ইত্যাদি জায়গায় যাওয়া চলবে না।
৭। অসুস্থ হলে, জ্বর বা ডায়রিয়া হলে ব্যায়াম বন্ধ রাখুন।
এভাবে ব্যায়াম করার পর শরীর গরম হলে একটু বিশ্রাম করে কয়েকটি আসন করে ফেলুন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে যা খুব উপকারে আসবে।
৮। ভুজঙ্গাসন (Bhujangasana): সাধারণত অনেকে কোবরা পোজ হিসাবে পরিচিত, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি প্রজনন ব্যবস্থাকে টোন দেয়, অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলিকে উত্সাহ দেয় এবং মেরুদণ্ডকে প্রসারিত করে। এটি রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং হৃদয়কে শক্তিশালী করতেও পরিচিত। ভুজঙ্গাসন অভ্যাসের পর শলভাসন অভ্যাস একান্ত প্রয়োজন।
৯। শলভাসন (Shalvasana): প্রণালী দেহ সম্পূর্ণ প্রসারিত করে কম্বল বা নরম বিছানার উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ো। হাত মুঠো করে উরুর সঙ্গে লাগিয়ে মাটিতে রাখো। মুঠুট দিক উপরে থাকবে। কাঁধ, কপাল বিছানায় লেগে থাকবে। এবার দম নিতে নিতে পড়ে দমবন্ধ করে নাভী থেকে পা পর্যন্ত দেহ শক্ত করে উপরে তুলো। এখন দৃষ্টি রাখতে হবে যাতে পায়ের আঙ্গুল সরল থাকে। হাটু না বাঁকে । পাঁচ থেকে দশ সেকেন্ডে এই অবস্থায় থেকে দম শিথিল করে মাটিতে নামাও। প্রথমে তিনবার পড়ে পাশ দশবার অভ্যাস করা যায়।
আরও পড়ুন :- পুজোর আগে ফিটনেসের টিপস : বাড়িতেই করুন (Makrasan) মকরাসন
১০। পদহস্তাসন
( padahastanasana ): প্রণালি বুক চিতিয়ে দেহ টান করে অবস্থান এর মত পা জোড়া করে দাড়াও এবং হাত দুটি কানের সঙ্গে চেপে মাথার উপর তুলো এবার দম
- Healthcaretips-66
- Health Care tips
ছাড়তে সাথে কোমর থেকে দেহ সহ উপরের শরীর সামনে বেঁকিয়ে দুই হাত দুই পায়ের দুপাশে রাখো। এবার কপাল হাটুতে ঠেকাও এই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবে দম নাও এবং ছাড়ো প্রথম অভ্যাসকারী প্রথম প্রথম অভ্যাসকারীদের পক্ষে এইরূপ করা শক্ত – এসময় হাঁটু প্রয়োজন মত ভেঙ্গে অভ্যাস করতে পারো।
১১। শশাঙ্গাসন (Shasangasana): হাটু গেড়ে বজ্রাসনে বসে দুহাত দিয়ে পায়ের গোড়ালি চেপে ধরে পাশে উপরে তুলে যতটা সম্ভব সামনে নিয়ে এসো এবং সঙ্গে সঙ্গে মাথা নুইয়ে হাঁটুর সামনে এনে মাথার তালু মাটিতে রেখে কপাল হাঁটুতে থাকা অবস্থায় যাতে কোমর থেকে মাথা পর্যন্ত ধনুকের মতো বাঁকা হয় এবং পিঠে ও পাঁজরের টান পড়ে এবং পেটের পেশী গুলি সংকুচিত হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখুন। এ অবস্থায় লক্ষ্য রাখতে হবে – জাতে চিবুক বুকে ঠেকে কণ্ঠনালীর বেশ চাপ পড়ে। এই আসনটি প্রথম প্রথম 30 সেকেন্ড করে করা যেতে পারে।
১২। পশ্চিমোত্তাসন ( Paschimottanasana): প্রণালি চিৎহয়ে হাতদুটি মাথার উপর লম্বালম্বি জড়িয়ে শুয়ে পড়ো এবার কোমর থেকে গোড়ালি পর্যন্ত পা দুটো সোজা রেখে কোমর থেকে দেহের উপরের অংশ দম নিতে নিতে আস্তে আস্তে মাটি থেকে তুলে সামনে বেঁকিয়ে দুই হাতে আঙুল দিয়ে পায়ের বুড়ো আঙ্গুল ধর ও দম ছাড়। এখন সামনের দিকে আরো ঝুঁকে কপাল ও মুখ হাঁটুতে ঠেকিয়ে দাও এবং সঙ্গে সঙ্গে হাত দুটি কনুইয়ের কাছ থেকে ভেঙে কনুই হাঁটুর কাছে মাটি ঠেকাও। প্রথম অভ্যাসকারী যদি পা সোজা রেখে কপাল ও মুখ হাঁটুতে ঠেকাতে না পারে তবে প্রথম প্রথম তার উচিত বা পা হাঁটুর কাছে একটু ভেঙে হাঁটু অল্প উপরে তুলে এই আসন অভ্যাস করা যেতে পারে।
১৩। জানুশিরাসন
(Janushirasana): প্রণালি পাদুটি সামনে ছড়িয়ে সোজা হয়ে বস। ডান পা হাঁটুর কাছে ভেঙে ডান পায়ের গোড়ালি যোনিমন্ডলে শক্ত করে চেপে রেখে পায়ের পাতা বা পায়ের উরুতে সংলগ্ন করো। এখন দুহাত দিয়ে বাঁ পায়ের আঙুলগুলি ধর। এইবার দম ছাড়তে ছাড়তে আস্তে আস্তে হাটুতে কপাল ঠেকাও। এ অবস্থায় দম স্বাভাবিক রেখে ১০ সেকেন্ড থাকার পর দম নিতে নিতে মাথা তুলে হাত ছেড়ে পা ছড়িয়ে দাও। পরে ১০ সেকেন্ড শবাসন করো। ঠিক এই রকম বাঁ পায়ের এরকম ভাবে করতে হবে।
প্রয়াত আয়রন ম্যান নীলমনি দাশের মতে এই আসনগুলি করলে ডায়াবেটিস নিরাময় হয়।