সুসন্তান লাভ
সুসন্তান লাভ করার জন্য কি কি উপায় অবলম্বন করা উচিত সে বিষয়ে এখানে। কিছু আলোচনা করা হচ্ছে।
স্ত্রীর গর্ভধারণযোগ্য ক্ষমতা ঋতুর প্রথম দিন থেকে ষোল দিন পর্যন্ত থাকে। ঋতুর প্রথম চারদিন এবং এগার ও তেরতম দিন সুসন্তানকামী ও সুস্থ শরীরাভিলাসী ব্যক্তি এই ছয়দিন সহবাস করবেন না। এ কদিন বাদ দিয়ে বাকি দশ দিনের মধ্যে যত বেশি দিন পরে গর্ভধান করবে, সন্তান ততবেশী সুস্থ, বলবান ও পরমায়ু বৃদ্ধি |প্রাপ্ত হয়। উপরোক্ত দশদিনের মধ্যে অমাবস্যা, পূর্ণিমা, চতুর্দশী, অষ্টমী, সংক্রান্তি ও রবিবার দিন কখনো সহবাসে ইচ্ছুক হবেন না। কারণ এই দিনগুলি পুরুষ ও স্ত্রীর শুক্র ও শোণিত দুষিত থাকে। যদি রাত্রির প্রথম প্রহরে গর্ভধান হয় সেই সন্তান। অল্পায়ু ও রুগ্ন হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রহরও গর্ভধানের পক্ষে বিশেষ শুভ সময় নয়। চতুর্থ প্রহর সর্বাপেক্ষা উপযুক্ত সময়, এই প্রহরে গর্ভধারণ হলে সন্তান দীর্ঘায়ু ও নিরোগ হয়ে থাকে।
ঋতুর চতুর্থ, ষষ্ঠ, অষ্টম, দশম ও দ্বাদশ রাত্রে যদি সহবাস করেন তাহলে পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। ঋতুর পঞ্চম, সপ্তম, নবম এবং একাদশ রাত্রে যদি সহবাস করেন তাহলে কন্যা সন্তান হয়। সমরাত্রে স্ত্রীর রজঃ অপেক্ষা পুরুষের বীর্য বেশি থাকে সেই সুবাদেই পুত্র সন্তান হয়। ঐরূপে বিজোড় রাত্রে পুরুষের বীর্য অপেক্ষা স্ত্রীর রজঃ বেশি থাকে সেই কারণেই কন্যা সন্তান হয়। সহবাসের পক্ষে খুব ভাল সোমবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাত্রি। মঙ্গলবার রাত্রে সহবাস করলে গর্ভ হলে মৃত সন্তানের জন্ম হয়। সকাল, সন্ধ্যা এবং দ্বিপ্রহরে সহবাস ক্ষতিকারক। সহবাস ঠিক সেই সময় করা উচিত যখন শরীর সম্পূর্ণরূপে সুস্থ থাকবে, মনের ভিতর কোনরূপ বাজে চিন্তা থাকবে না, পেট খালি থাকবে না। পায়খানা, প্রস্রাব এবং ক্ষিদে, পিপাসার সময় সহবাস করা অনুচিত। গর্ভাবস্থায় যদি ধর্ম ও সৎচিন্তার মধ্যে বিভোর হয়ে থাকা যায় তাহলে সন্তান ধার্মিক ও সুখী হয়। গর্ভবতী মহিলা যদি রাগ, হিংসা, মিথ্যা কথা, অন্যায় আচরণ করে তাহলে গর্ভস্থ সন্তানও সেইসব গুণ নিয়েই জন্মগ্রহণ করে। গর্ভাবস্থায় দিবানিদ্রা, উপবাস, রাত্রি জাগরণ, শোক, দুঃখ পরিত্যাগ করা উচিত।
রজঃস্বলা স্ত্রীর রজঃনিঃসারণ দিন থেকে তিনদিন পর্যন্ত স্নান করা কখনোই উচিত নয়। স্নান করলে দেহ থেকে দূষিত রক্ত না গিয়ে নানাপ্রকার রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। এই দূষিত রক্ত স্বাস্থ্যের পক্ষে এতই খারাপ যে, এই সময় সহবাস করলে জটিল রোগের সম্ভাবনা থাকে। এমনকি পুরুষ নপুংসকও হয়ে যেতে পারে। এই সময় সহবাসের ফলে যদি গর্ভাধান হয় তাহলে গর্ভস্থ সন্তান অল্পায়ু ও বিকলাঙ্গ হয়। রজঃস্বলা স্ত্রীর নিরামিষ আহার করা উচিত। গর্ভিণী সন্তানের প্রত্যেক অঙ্গ ব্যক্ত হবার আগে অর্থাৎ গর্ভের তৃতীয় মাসে একটি কাঁচা পলাশপত্র দুধের সঙ্গে বেটে গর্ভিণী যদি সেবন করে তাহলে গর্ভস্থ সন্তান বীর্যবান পুত্রসন্তান হবে। গর্ভের চতুর্থ মাসে গর্ভস্থ সন্তানের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও চৈতনা প্রকাশের সময় হয়। এই সময়ে মা যে ধরনের বিদ্যাচর্চা করবে সন্তানও ঠিক সেইরকমই গুণ নিয়ে ভূমিষ্ঠ হবে। গভিনী স্ত্রীর চতুর্থ মাস থেকে যা খেতে বা দেখতে ইচ্ছে করবে তা যদি পূর্ণ না হয় তাহলে সন্তানের অনিষ্ট হতে পারে। যে সমস্ত স্ত্রী গর্ভাবস্থায় প্রসব সময় পর্যন্ত শারীরিক পরিশ্রম করে থাকে তাঁদের প্রসবের সময় বেশি কষ্ট পেতে হয় না। গর্ভিঙ্গী ও গর্ভস্থ শিশু শুষ্ক হলে পুষ্টির জন্য যষ্ঠি মধু ও গমারি ফলের সহিত সিদ্ধ দুধ শর্করা মিশিয়ে খেতে হবে। মুরগির ডিম বা হাঁসের ডিম ও মুরগির মাংস খাওয়া প্রয়োজন। গর্ভের দশম মাসে গর্ভিনী শুন্ঠি, যষ্টিমধু ও দেবদারু ছালের চূর্ণ-র সঙ্গে সিদ্ধ দুধ সেবন করলে গর্ভস্থ সন্তান হাটপুষ্ট হয়।