Dengue symptoms: ডেঙ্গু আটকাতে জেনে রাখুন তার উপসর্গ-লক্ষণগুলো

বর্ষাকাল হলো রোগব্যাধির আঁতুড় ঘর। জ্বর, সর্দি-কাশি, পেট খারাপ, চোখের সমস্যা তো লেগেই থাকে, পাশাপাশি মশাবাহিত রোগেরও প্রকোপ বাড়ে। এই সময় ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ায় কাবু হন সাধারণ মানুষ।
Dengue symptoms: ডেঙ্গু আটকাতে জেনে রাখুন তার উপসর্গ-লক্ষণগুলো
প্রতি বছরই বর্ষায় ডেঙ্গু-আতঙ্ক তৈরি হয় ভারতের কিছু প্রান্তে। এবারও বর্ষা পড়তেই চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু (Dengue)। চিকিৎসকদের মতে, সাবধানতা বা সতর্কতা অবলম্বন না করলে মশাবাহিত কোনও অসুখ থেকেই রেহাই পাওয়া সম্ভব নয় ।
ডেঙ্গু হওয়ার কারণ: ডেঙ্গু জ্বর হলো মশাবাহিত ভাইরাল সংক্রমণ। এডিস প্রজাতির স্ত্রী মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়ে থাকে। যখন মশা একজন সংক্রমিত ব্যক্তিকে কামড় দেয় এবং তারপর সেই ভাইরাস বহন করার সময় অন্য একজন সুস্থ ব্যক্তিকে কামড় দেয়, তখনই সেই ব্যক্তি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়। অর্থাৎ সংক্রমিত স্ত্রী মশার কামড়ে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাস।
ডেঙ্গু ভাইরাসের ৪টি স্ট্রেন রয়েছে : DEN-1- DEN-2- DEN-3 এবং DEN-4। ডেঙ্গু সরাসরি এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির দেহে সংক্রামিত হয় না। কেবল মশার কামড়ের মাধ্যমেই ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাস। এছাড়া, ডেঙ্গু হওয়ার অন্যান্য কারণগুলি হলো- ১) জমা জল, যা এই মশার প্রজনন ক্ষেত্র। ২) আবহাওয়ার পরিস্থিতি যেমন উচ্চ তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতা। ৩) ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে খুব সহজেই সংক্রমিত হতে পারে এই ভাইরাসে।

ডেঙ্গুর উপসর্গ: ডেঙ্গু জ্বরের সাধারণ কিছু লক্ষণ হলো – 

১) মাত্রাতিরিক্ত জ্বর, মাথা ব্যথা, সারা শরীরে ব্যথা-যন্ত্রণা। গাঁটে গাঁটে ব্যথা। 

২) শরীরে লালচে দাগ বা বাম্প। র‍্যাশ, চুলকানি । 

৩) ক্লান্তি, গলাব্যথা এবং ঢোক গিলতে কষ্ট । 

৪) বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়া, অরুচি, ডায়েরিয়া। তবে ডেঙ্গু মারাত্মক আকার ধারণ করলে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার (DHF) বা ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম (DSS) দেখা দিতে পারে। ডেঙ্গু গুরুতর আকার ধারণ করলে যে লক্ষণগুলি দেখা দেয়–পেটে ব্যথা। -ক্রমাগত বমি হওয়া। -প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া। -নাক বা মাড়ি থেকে রক্ত পড়া। -শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া। -শারীরিক অস্বস্তি। -পাল রেট বেড়ে যাওয়া এবং রক্তচাপ কমতে থাকা। -খুব তৃষ্ণার্ত বোধ করা। -দুর্বল ও ক্লান্তি বোধ, অলসতা। -শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া। -বমি বা মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়া। -ত্বকে লাল লাল র‍্যাশ।

ডেঙ্গি ধরা পড়লেও রোগীকে বাড়িতে রেখে শুশ্রূষা করা যেতে পারে। তবে উপরিউক্ত উপসর্গগুলি দেখা দিলেই রোগীকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করানো প্রয়োজন। ডেঙ্গু হলে কী করবেন ?
চিকিৎসকের মতে, ডেঙ্গু হলে শরীরের কোশগুলি জলশূন্য হয়ে পড়ে। এই সময়ে প্রচুর জল পান করতে হবে। পাশাপাশি ডাবের জল, ফলের রস, স্যুপ, স্ট্যু, লিকার চা বেশি করে খেতে হবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, মুরগির মাংস, ডাল, ছোটো মাছের তরকারি রাখতে হবে রোজের খাদ্যতালিকায়। এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের।
আরও পড়ুন :-

ডেঙ্গুর চিকিৎসাঃ ডেঙ্গু চিকিৎসার জন্য কোনও নির্দিষ্ট অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ ব্যবহার করা হয় না। শারীরিক উপসর্গগুলি উপশম করাই এই চিকিৎসার প্রাথমিক লক্ষ্য। জ্বর কমাতে ওভার-দ্য-কাউন্টার ঔষধ দেওয়া হয়। মাথাব্যথা, জয়েন্ট পেন এবং পেশী ব্যথার জন্যও ওষুধ দেন চিকিৎসকরা। তবে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার (DHF) বা ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম (DSS) দেখা দিলে রোগীর শিরায় তরল প্রতিস্থাপন, রক্ত প্রদান করা এবং ইনটেনসিভ কেয়ার মনিটরিং এর মতো অতিরিক্ত চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়া, ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে নিয়মিত শারীরিক তাপমাত্রা, রক্তচাপ এবং প্লেটলেট কাউন্ট পর্যবেক্ষণ করা আবশ্যক।

ডেঙ্গু কাবু করতে ঘরোয়া টোটকা

Dengue symptoms: ডেঙ্গু আটকাতে জেনে রাখুন তার উপসর্গ-লক্ষণগুলো
ডেঙ্গুর চোখ রাঙানিতে নাজেহাল গোটা রাজ্য। দিনে দিনে বাড়ছে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা। সেই তালিকায় রয়েছেন, শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই। তাই এই সময় জ্বর, সর্দি-কাশি হলে বাড়তি সতর্কতা নিতে বলছেন চিকিৎসকরা । এই রোগটি হয় এডিস মশা কামড়ানোর কারণে। তবে সব মশায় এই ভাইরাস থাকে না। বরং যেই মশা এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হয়, তার থেকেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে। প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ ডেঙ্গুতে (Den- gue) আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
ডেঙ্গু জ্বরের নির্দিষ্ট কোনও চিকিৎসা নেই। শারীরিক উপসর্গগুলি উপশম করাই এই চিকিৎসার প্রাথমিক লক্ষ্য। জ্বর কমাতে ওভার-দ্য-কাউন্টার ঔষধ দেওয়া হয়। মাথাব্যথা, জয়েন্ট পেন এবং পেশী ব্যথার জন্যও ঔষধ দেন চিকিৎসকরা। এছাড়া, ডেঙ্গুর সময় কিছু ঘরোয়া উপায় বেশ কাজে দেয় । আসুন জেনে নেওয়া যাক, ডেঙ্গু হলে ঘরোয়া উপায়ে কীভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় (Home Remedies For Dengue ) ।
পেঁপে পাতার রস: পেঁপে পাতার রস ডেঙ্গুর চিকিৎসায় খুবই উপকারী। টাটকা পেঁপে পাতা বেটে তার রস বার করে নিন। দিনে দু’বার ২ টেবিল চামচ করে এই রস খান। এতে প্লেটলেট বাড়ে এবং ডেঙ্গুর অন্যান্য উপসর্গও কমতে থাকে।
নিম পাতা: ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে দারুণ কার্যকরী নিম পাতা। একমুঠো নিম পাতা জলে ফুটিয়ে ছেঁকে নিন। তারপর সেই জল পান করুন। নিমের এই জল জ্বর কমায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (IMMUNITY POWER) বাড়াতেও বেশ উপকারী।

আদা: এক টুকরো আদা গ্রেট করে জলে ফুটিয়ে নিন। এতে চাইলে মধু এবং পাতিলেবুর রস মেশাতে পারেন। ডেঙ্গুর উপসর্গ উপশম করতে খুবই উপকারী এই আদা চা। আদায় রয়েছে প্রদাহ-বিরোধী (anti-inflamatory) বৈশিষ্ট্য, যা শারীরিক প্রদাহ কমায় এবং গলা ব্যথা সারাতে সাহায্য করে। মধু এবং লেবুও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লেবু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ।
রসুন: কয়েক কোয়া রসুন কুচি করে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে নিন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই মিশ্রণটি খান। রসুনের অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ভাইরাল বৈশিষ্ট্য সংক্রমণ থেকে বাঁচায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। মধু প্রদাহ কমায় এবং গলা ব্যথা প্রশমিত করে।

Leave a Comment