Dehydration: গরম কালে ডিহাইড্রেশনের প্রভাব

প্রতিবেদন।। প্রখর তাপ। তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। অচিরেই ৪৫ ছোঁবে। এই সময় সবচেয়ে বেশি ভয় কী? এই গরমে হাঁসফাঁস দশা। ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে জল বেরিয়ে যাচ্ছে অনর্গল। মূল ভয়ের জায়গা এটিই। শরীর থেকে জল ও নুন বেরিয়ে যাওয়ায় এই সময় তাপ প্রবাহের কারণে Dehydration হয়। সহজ কথায় Dehydration কী?- হাইড্রো কথার অর্থ হল জল। ডি অর্থাৎ বিয়োগ। অতএব শরীর থেকে জল ও নানা খনিজ বেরিয়ে যাওয়াকে Dehydration বলে। তবে এই সমস্যার নানা কারণ ও ধরণ রয়েছে। লু বা তাপপ্রবাহের কারছে এমন হলে তাকে হিট Dehydration বলে। গরমের জন্য শরীরে জল ও নূনের পরিমাণ খুব কমে গেলে বা শরীরে পর্যাপ্ত জলের অভাব দেখা দিলে এই সমস্যা শুরু হয়। জল বেরিয়ে যাওয়াই কি সমস্যার প্রধান কারণ? তাহলে তো জলপানই সমাধান। এক একজনের শরীরে এক একভাবে এই সমস্যা দেখা দেয়। কারও ক্ষেত্রে খনিজ বা সোডিয়াম-পটাশিয়ামের চেয়ে জল বেশি বের হয়। ফলে দেহে নুনের ভাগ বেড়ে যায়। একে বলে হাইপার ম্যাট্রিমিক ডিহাইড্রেশনের শিকার। কিন্তু জল খেলেন। তাহলে কিন্তু শরীর তার হারানো নুন ফেরত পেল না। ফলে ওআরএস এবং জলের সমতা রেখে শরীরকে হাইড্রেট করতে হবে।

Dehydration: গরম কালে ডিহাইড্রেশনের প্রভাব
গরম থেকে বাঁচতে ঠান্ডা জল পান করছেন

একজন কী করে বুঝবেন তাঁর Dehydration হয়েছে? রোগী আগে – খেয়াল রাখবেন তাঁর জিভ ও মুখের ভিতরটা শুকিয়ে যাচ্ছে কি না। তারপর খেয়াল করবেন প্রস্রাবের রং হলুদ হচ্ছে কি না। পেশিতে টান ধরছে কি না। তিনটি উপসর্গের একটি হলেই বুঝতে হবে জলের অভাব দেখা দিয়েছে। সেটি জল এবং ওআরএস খেয়ে বাড়িতেই সামাল দেওয়া যায়। হিট Dehydration আর কী কী হতে পারে?– ডিহাইড্রেশনের কারণে মাথা ঘোরা, বমিভাব, শরীরের তাপমাত্রা অত্যধিক বেড়ে যাওয়া, সঙ্গে ঘাম এইসবও দেখা যায়। এমন সমস্যাগুলো মৃদু হলে জল ওআরএস খেয়ে ঠান্ডা ঘরে রোগীকে রেখে সমস্যা মেটানো যায়। কতটা জল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন? তেষ্টা পেলেই জল খেতে হবে। কতটা খাবেন নির্ভর করে তাঁর ওজনের উপর। সাধারণত একজন ৬০ কেজি ওজনের মানুষের দিন গড় জল খাওয়ার মাত্রা দুই থেকে আড়াই লিটার। ওজন বাড়লে এই মাত্রাও বাড়বে। একজন ১০০ কেজি ওজনের সুস্থ মানুষ জল খাবেন তিন থেকে সাড়ে তিন লিটার। সবই আবার বেড়ে যাবে গরমের দিনে। তাই তেষ্টা পেলেই জল খান। হাসপাতালে কখন? – খুব – মাথা ঘুরলে, মাথা যন্ত্রণা আয়ত্তের বাইরে চলে গেলে, শিরার টান অত্যধিক হলে, শরীরের তাপমাত্রা কিছুতেই ১০৩/১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের নিচে না নামলে, কালবিলম্ব না করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত। রোগীর নানা নায়বিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। খুব দুর্বল হয়ে পড়তে পারেন। অসহনীয় মাথা যন্ত্রণা, খিঁচুনি ইত্যাদি হতে পারে। এগুলি হলেও হাসপাতালে যাওয়া উচিত।

আরও পড়ুনঃ :- Protection of children in summer: গরমের প্রভাব থেকে তাদের কিভাবে রক্ষা করবেন?

ঘামাচি প্রতিরোধে কৌশল: গরমে স্বাস্থ্যসম্পর্কে কিছু উপকারী পরামর্শ

বাইরে বেরলে কী কী সতর্কতা নেবেন?- ছাতা, সানগ্লাস সঙ্গে রাখতেই হবে। সানস্ক্রিম মেখে বেরন। সঙ্গে রাখুন পর্যাপ্ত জল, ওআরএস। গ্লুকোজের চেয়ে ওআরএস ভালো। রাস্তার কাটা ফল বা ফলের রস খাবেন না। তার চেয়ে ডাবের জল খান। আখ কিনে বাড়ির আখের রস খেতে পারেন। কোল্ড ড্রিঙ্কস একেবারে খাবেন না। হাঁটার সময় ছায়া পেলে সেইদিক ধরে হাঁটুন। কষ্ট হলে ছায়া দেখে বিশ্রাম নিন। মাঝে মধ্যেই চোখ, মুখ ও ঘাড়ে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিন। অসুস্থ বোধ করলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণ নিন।

শিশুদের জন্য বাড়তি সতর্কতা?— অতিরিক্ত গরমের সঙ্গে তাপ প্রবাহ মিলে অধিকাংশ শিশুই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। শেষ ক’দিনে জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেড়েছে। সঙ্গে থাকছে সর্দি-সহ পাতলা পায়খানা এবং অন্য সমস্যা। সব থেকে বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিচ্ছে Dehydration। শিশুদের এই সময় উচ্চ মাত্রায় প্রোটিনযুক্ত খাবার না দেওয়াই ভালো। কারণ ওই খাবারের কারণে কিডনির উপরে চাপ পড়বে। শরীরে বেশি জলের প্রয়োজন হবে। তীব্র গরম থেকে ফিরেই এসি বা পাখার নিচে যেতে দেবেন না। সাধারণ তাপমাত্রায় কিছুক্ষণ জিরিয়ে তবেই ঠান্ডা ঘরে ঢোকা উচিত। আর এসির তাপমাত্রা খুব কমাবেন না। ২৪-২৬ এর মধ্যে রাখুন। গরমের ছুটি শেষ হওয়ার পরও বাচ্চা যেন টিফিনের পর রোদে বেরিয়ে খেলাধূলা না করে, সেদিকেও খেয়াল রাখুন।

Leave a Comment