ঘুম থেকে উঠতেই গলা খুসখুস করে? কারণ ও প্রতিকার

ঘুম থেকে ওঠার পর অনেকেরই গলা খুসখুস করে। গলার ভিতরটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাওয়ার মতো অনুভূতিও হয়। গলার ভিতরে একটা অস্বস্তিও বোধ করেন কেউ কেউ। ঢোক গিলতে গিয়ে ব্যথাও হতে পারে। আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময়টায় এমনটা হলে আপনি হয়তো ভাবছেন, এজন্য দায়ী কোনো না কোনো ভাইরাস। আপনার ধারণা যে একেবারে ভুল, তা নয়। তবে অন্য কারণ থাকতে পারে।

ঘুম থেকে উঠতেই গলা খুসখুস করছে
গলা খুসখুস করছে তাই অস্বস্তি বোধ করছেন

জলশূন্যতা :
রাতে বা যারা রোজা রাখছেন, তাদের দিনের একটা দীর্ঘ সময় কিন্তু জল খাওয়া হচ্ছে না। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে আপনার শরীর জলশূন্য হয়ে পড়তেই পারে। সেক্ষেত্রে আপনি তৃষ্ণা অনুভব করবেন, গলা শুকিয়ে আসবে। সঙ্গে থাকতে পারে মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরানোর মতো সমস্যা। এমনকি ঘুম থেকে ওঠার পরেও এই জলশূন্যতার জন্যই আপনি ক্লান্ত বোধ করতে পারেন। প্রস্রাব করার সময় রংটা লক্ষ করুন। গাঢ় রঙের প্রস্রাব হওয়ার অর্থও কিন্তু জলশূন্যতা।

নাক ডাকা, ঘুমের মধ্যে শ্বাসের সমস্যা :
গলার যে পেশিগুলো শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজে নিয়োজিত, নাক ডাকলে সেগুলো বেশি বেশি কাঁপতে থাকে। এই কম্পনের কারণেই ঘুম ভাঙার পর আপনি গলায় অস্বস্তি বোধ করতে পারেন। তাছাড়া ঘুমের মধ্যে শ্বাসের যেকোনো সমস্যা হলে সে সময় শ্বাস-প্রশ্বাস চলে মুখ দিয়ে। তাই সহজে মুখ শুকিয়ে গিয়েও অস্বস্তিকর সমস্যাগুলো হতে পারে।

অ্যালার্জি:
পরিবেশের কোনো একটি উপাদানে কারো অ্যালার্জি থাকতে পারে। বাতাসে এমন উপাদানের উপস্থিতির কারণেও গলা খুসখুস বা হাঁচি-কাশি হয়ে থাকে। আবার অ্যালার্জির ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ও গলা শুকায়।

জীবাণু সংক্রমণ :
ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক নানান ধরনের জীবাণুর সংক্রমণেই গলাব্যথা, গলা খুসখুস বা কাশির মতো উপসর্গ দেখা দেয়। সঙ্গে জ্বরও থাকে।

বদহজম:
পাকস্থলীর স্বাভাবিক কাজের জন্য সেখানে অ্যাসিডিক অর্থাৎ অম্লীয় পরিবেশের প্রয়োজন হয়। কারও কারও ক্ষেত্রে শোয়া অবস্থায় এই অ্যাসিড পাকস্থলী থেকে ওপরের দিকে উঠে আসতে পারে। তাই ঘুম ভাঙার পর মনে হয়, গলার কাছে কিছু একটা দলা পাকিয়ে আছে। বুক জ্বালাপোড়া এবং কণ্ঠস্বর ভেঙে যাওয়ার মতো উপসর্গও দেখা দেয়।

টিউমার :
গলার টিউমারের কারণেও এমন উপসর্গ দেখা দেয়। তবে কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন, ঢোক গিলতে না পারা কিংবা গলা থেকে রক্ত আসার মতো আনুষঙ্গিক উপসর্গও থাকে।

গলা খুসখুস জাতীয় সমস্যায় করণীয় :
পর্যাপ্ত জল খান। উষ্ণ পানীয় খান। মধুও খেতে পারেন। ঘর খুব শুষ্ক থাকলে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন। এরপরও সমস্যা না মিটলে কিংবা অসুস্থতার অন্য কোনো উপসর্গ থাকলে চিকিৎসা নিন।

উপসংহার : গলা সমস্যার কোনো লক্ষণ দেখা গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করা উচিত। এছাড়াও, পরিশ্রম করতে হবে যাতে কোনো অন্যান্য সমস্যার সৃষ্টি না হয় এবং স্বাস্থ্য ভাল থাকে। ।

Leave a Comment